ঢাকা    মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
খোলা বার্তা

নির্বাচনের আগে ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান



নির্বাচনের আগে ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান

ঘন ঘন ভ্রমণকারী হয়ে উঠছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। ২০২১ সালে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর গত ছয় মাসে রেকর্ড সংখ্যক দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রয়টার্স জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কয়েক বছরের মধ্যে হ্লাইং যত দেশ ভ্রমণ করেছেন, তার চেয়েও বেশি দেশে ভ্রমণ করেছেন গত ছয় মাসে।

ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য মিন অং হ্লাইং-এর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সবশেষ ভ্রমণের মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীন ও রাশিয়ায় দুটি করে সফর। সেই সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ড, বেলারুশ এবং চলতি সপ্তাহে কাজাখস্তানে ভ্রমণ করেন।

গত মার্চ মাসে এক মারাত্মক ভূমিকম্পের পর বিশ্বমঞ্চে নতুন করে মিয়ানমারের জান্তা নেতার যোগাযোগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই গতির ওপর ভিত্তি করে তিনি সম্প্রতি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।

ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেছেন, এই বছর মিন অং হ্লাইং-এর ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ তার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির প্রতিফলন। তার বিরুদ্ধে বড় হুমকি কম, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা হ্রাস পাচ্ছে। সেনাবাহিনী কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে।



এ বিষয়ে জান্তার একজন মুখপাত্রের কাছে রয়টার্স মন্তব্য জানতে চাইলেও সাড়া মেলেনি। তবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাদের প্রথম পাতায় মিন অং হ্লাইং-এর আন্তর্জাতিক ভ্রমণগুলোকে বিশিষ্টভাবে তুলে ধরছে এবং এগুলোকে দেশের জন্য ইতিবাচক উন্নয়ন হিসেবে বর্ণনা করেছে।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে মিন অং হ্লাইং-এর চীন, রাশিয়া এবং কাজাখস্তান সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'সকল সফরের সংক্ষেপে বলতে গেলে, তিনটি দেশই মিয়ানমারের নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে।'

অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের পর মিয়ানমার জান্তা অনেক অঞ্চলের রাজধানীতে একঘরে হয়ে পড়ে। কিছু দেশ জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান নেশনস-এর ১০ সদস্যের সংগঠন - যার মধ্যে মিয়ানমারও রয়েছে, তারা মিন অং হ্লাইং এবং শীর্ষ জান্তা মন্ত্রীদের সংগঠনের শীর্ষ সম্মেলন থেকে নিষিদ্ধ করে।


গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ঘোষণা করেছিলেন, ৬৯ বছর বয়সী জেনারেলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হবে। এর ফলে তার ভ্রমণের বিকল্প সীমিত হবে।



সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী এক অভূতপূর্ব সশস্ত্র বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় জান্তা নেতার অভ্যন্তরীণ চলাচলও ছিল সীমিত।

চার বছরের জরুরি অবস্থার শাসনের পর গত জুলাইয়ের শেষের দিকে সামরিক বাহিনী ২৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়।

লড়াই অব্যাহত থাকায়, দেশের প্রায় অর্ধেক অংশে ভোটগ্রহণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেবলমাত্র যাচাইকৃত সামরিক-পন্থী দলগুলোকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো এবং বিরোধী দলসহ বিদ্রোহী যদ্ধারা এই নির্বাচনকে 'প্রহসন' বলে বর্ণনা করেছে।

আপনার মতামত লিখুন

খোলা বার্তা

মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫


নির্বাচনের আগে ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান

প্রকাশের তারিখ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

ঘন ঘন ভ্রমণকারী হয়ে উঠছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। ২০২১ সালে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর গত ছয় মাসে রেকর্ড সংখ্যক দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রয়টার্স জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কয়েক বছরের মধ্যে হ্লাইং যত দেশ ভ্রমণ করেছেন, তার চেয়েও বেশি দেশে ভ্রমণ করেছেন গত ছয় মাসে।

ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য মিন অং হ্লাইং-এর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সবশেষ ভ্রমণের মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীন ও রাশিয়ায় দুটি করে সফর। সেই সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ড, বেলারুশ এবং চলতি সপ্তাহে কাজাখস্তানে ভ্রমণ করেন।

গত মার্চ মাসে এক মারাত্মক ভূমিকম্পের পর বিশ্বমঞ্চে নতুন করে মিয়ানমারের জান্তা নেতার যোগাযোগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই গতির ওপর ভিত্তি করে তিনি সম্প্রতি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।

ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেছেন, এই বছর মিন অং হ্লাইং-এর ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ তার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির প্রতিফলন। তার বিরুদ্ধে বড় হুমকি কম, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা হ্রাস পাচ্ছে। সেনাবাহিনী কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে।



এ বিষয়ে জান্তার একজন মুখপাত্রের কাছে রয়টার্স মন্তব্য জানতে চাইলেও সাড়া মেলেনি। তবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাদের প্রথম পাতায় মিন অং হ্লাইং-এর আন্তর্জাতিক ভ্রমণগুলোকে বিশিষ্টভাবে তুলে ধরছে এবং এগুলোকে দেশের জন্য ইতিবাচক উন্নয়ন হিসেবে বর্ণনা করেছে।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে মিন অং হ্লাইং-এর চীন, রাশিয়া এবং কাজাখস্তান সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'সকল সফরের সংক্ষেপে বলতে গেলে, তিনটি দেশই মিয়ানমারের নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে।'

অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের পর মিয়ানমার জান্তা অনেক অঞ্চলের রাজধানীতে একঘরে হয়ে পড়ে। কিছু দেশ জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান নেশনস-এর ১০ সদস্যের সংগঠন - যার মধ্যে মিয়ানমারও রয়েছে, তারা মিন অং হ্লাইং এবং শীর্ষ জান্তা মন্ত্রীদের সংগঠনের শীর্ষ সম্মেলন থেকে নিষিদ্ধ করে।


গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ঘোষণা করেছিলেন, ৬৯ বছর বয়সী জেনারেলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হবে। এর ফলে তার ভ্রমণের বিকল্প সীমিত হবে।



সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী এক অভূতপূর্ব সশস্ত্র বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় জান্তা নেতার অভ্যন্তরীণ চলাচলও ছিল সীমিত।

চার বছরের জরুরি অবস্থার শাসনের পর গত জুলাইয়ের শেষের দিকে সামরিক বাহিনী ২৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়।

লড়াই অব্যাহত থাকায়, দেশের প্রায় অর্ধেক অংশে ভোটগ্রহণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেবলমাত্র যাচাইকৃত সামরিক-পন্থী দলগুলোকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো এবং বিরোধী দলসহ বিদ্রোহী যদ্ধারা এই নির্বাচনকে 'প্রহসন' বলে বর্ণনা করেছে।


খোলা বার্তা

সম্পাদক ও প্রকাশক : দীপক কুমার কর
নির্বাহী সম্পাদক : সাইদুল ইসলাম আবির।
মোবাইল: ০১৭৫০-৭০৭৬৩৬
ই মেইল: kholabartaonline@gmail.com
কপিরাইট © ২০২৫ খোলা বার্তা । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত