ঢাকা    মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
খোলা বার্তা

ভারত-চীন সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে পুনরায়



ভারত-চীন সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে পুনরায়

চার বছর পর ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল এই মাসেই পুনরায় শুরু হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি দুই দেশের সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিকীকরণের দিকে আরও একটি পদক্ষেপ। শুক্রবার (৩ অক্টোম্বর) বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

২০২০ সালে সীমান্তে দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে গত এক বছর ধরে দিল্লি ও বেইজিং সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। যার মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর পদক্ষেপও রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভারতের এয়ারলাইন ইন্ডিগো ঘোষণা করেছে, তারা ২৬ অক্টোবর থেকে কলকাতা ও গুয়াংঝুর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করবে। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফ্লাইট পুনরায় শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে ‘জনগণের সাথে জনগণের যোগাযোগ আরও সহজ হবে’ এবং ‘দ্বিপাক্ষিক আদান-প্রদান ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে’ সহায়তা করবে।


ভারত ও চিনের মধ্যে ৩,৪৪০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ একটি অচিহ্নিত সীমান্ত রয়েছে এবং উভয় দেশেরই আঞ্চলিক দাবি রয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান নদী উপত্যকায় দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, এতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সৈন্য এবং চারজন চীনা সৈন্য নিহত হন। ১৯৭৫ সালের পর এটি ছিল দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম প্রাণঘাতী সংঘাত, যা দুই দেশের সম্পর্কে শীতলতা নিয়ে আসে। 

তবে গত এক বছর ধরে বেইজিং ও দিল্লি খারাপ হওয়া সম্পর্ক ধীরে ধীরে পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। দুই পক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বেশ কয়েক দফায় আলোচনা ও বৈঠক করেছেন। গত বছরের অক্টোবরে ভারত ও চীন বিতর্কিত হিমালয় সীমান্ত বরাবর উত্তেজনা কমাতে টহল ব্যবস্থা নিয়ে সম্মত হয়েছিল।

এই বছর চীন ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে কিছু ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে, অন্যদিকে ভারত চীনা পর্যটকদের জন্য ভিসা পরিষেবা পুনরায় চালু করেছে এবং নির্দিষ্ট গিরিপথ দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় শুরু করার বিষয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে।


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাস্তিমূলক শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্কের অবনতিও দিল্লি-বেইজিং সম্পর্কের জন্য একটি প্রেরণা জুগিয়েছে।


গত আগস্টে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দিল্লি সফর করেন, যেখানে তিনি বলেন যে ভারত ও চীনের একে অপরকে "প্রতিপক্ষ" নয় বরং "অংশীদার" হিসাবে দেখা উচিত। 

একই মাসের শেষের দিকে ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত এবং অন্যান্য দেশের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের জন্য ‘হুমকি’ বলে অভিহিত করেন।

গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) প্রতিরক্ষা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করেন। তিনি এই শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথেও দেখা করেন এবং উভয় নেতা ভারত-চিন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

আপনার মতামত লিখুন

খোলা বার্তা

মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫


ভারত-চীন সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে পুনরায়

প্রকাশের তারিখ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

চার বছর পর ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল এই মাসেই পুনরায় শুরু হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি দুই দেশের সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিকীকরণের দিকে আরও একটি পদক্ষেপ। শুক্রবার (৩ অক্টোম্বর) বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

২০২০ সালে সীমান্তে দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে গত এক বছর ধরে দিল্লি ও বেইজিং সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। যার মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর পদক্ষেপও রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভারতের এয়ারলাইন ইন্ডিগো ঘোষণা করেছে, তারা ২৬ অক্টোবর থেকে কলকাতা ও গুয়াংঝুর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করবে। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফ্লাইট পুনরায় শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে ‘জনগণের সাথে জনগণের যোগাযোগ আরও সহজ হবে’ এবং ‘দ্বিপাক্ষিক আদান-প্রদান ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে’ সহায়তা করবে।


ভারত ও চিনের মধ্যে ৩,৪৪০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ একটি অচিহ্নিত সীমান্ত রয়েছে এবং উভয় দেশেরই আঞ্চলিক দাবি রয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান নদী উপত্যকায় দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, এতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সৈন্য এবং চারজন চীনা সৈন্য নিহত হন। ১৯৭৫ সালের পর এটি ছিল দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম প্রাণঘাতী সংঘাত, যা দুই দেশের সম্পর্কে শীতলতা নিয়ে আসে। 

তবে গত এক বছর ধরে বেইজিং ও দিল্লি খারাপ হওয়া সম্পর্ক ধীরে ধীরে পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। দুই পক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বেশ কয়েক দফায় আলোচনা ও বৈঠক করেছেন। গত বছরের অক্টোবরে ভারত ও চীন বিতর্কিত হিমালয় সীমান্ত বরাবর উত্তেজনা কমাতে টহল ব্যবস্থা নিয়ে সম্মত হয়েছিল।

এই বছর চীন ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে কিছু ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে, অন্যদিকে ভারত চীনা পর্যটকদের জন্য ভিসা পরিষেবা পুনরায় চালু করেছে এবং নির্দিষ্ট গিরিপথ দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় শুরু করার বিষয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে।


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাস্তিমূলক শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্কের অবনতিও দিল্লি-বেইজিং সম্পর্কের জন্য একটি প্রেরণা জুগিয়েছে।


গত আগস্টে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দিল্লি সফর করেন, যেখানে তিনি বলেন যে ভারত ও চীনের একে অপরকে "প্রতিপক্ষ" নয় বরং "অংশীদার" হিসাবে দেখা উচিত। 

একই মাসের শেষের দিকে ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত এবং অন্যান্য দেশের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের জন্য ‘হুমকি’ বলে অভিহিত করেন।

গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) প্রতিরক্ষা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করেন। তিনি এই শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথেও দেখা করেন এবং উভয় নেতা ভারত-চিন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।


খোলা বার্তা

সম্পাদক ও প্রকাশক : দীপক কুমার কর
নির্বাহী সম্পাদক : সাইদুল ইসলাম আবির।
মোবাইল: ০১৭৫০-৭০৭৬৩৬
ই মেইল: kholabartaonline@gmail.com
কপিরাইট © ২০২৫ খোলা বার্তা । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত