ঢাকা    মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
খোলা বার্তা

চার বছর ধরে সংস্কারহীন রাস্তায় দুর্ভোগে রায়গঞ্জের রোগীরা



চার বছর ধরে সংস্কারহীন রাস্তায় দুর্ভোগে রায়গঞ্জের রোগীরা

প্রায় চার বছরেরও বেশি সময় ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে আছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা। প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে এ হাসপাতালে আসেন। কিন্তু খানাখন্দে ভরা রাস্তাটি এখন পরিণত হয়েছে রোগী ও স্বজনদের জন্য নতুন এক দুর্ভোগে।

গুরুতর অসুস্থ রোগী বহনকারী রিকশা-ভ্যান কিংবা অ্যাম্বুলেন্স প্রায়ই গর্তে আটকে পড়ে। এতে চিকিৎসা পেতে দেরি হওয়াসহ রোগীর অবস্থা আরও অবনতির আশঙ্কা দেখা দেয়।

শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রায়গঞ্জ বাজার চত্বরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশ ঘুরে দেখা যায়—হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে ছোট ছোট জলাশয়ে পরিণত হয়। ফলে কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল—তা বোঝা যায় না। এতে প্রায়ই মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ট্রাক, পিকআপভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন গর্তে পড়ে বিকল হচ্ছে। কেউ কেউ পড়ে গিয়ে আহতও হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা এস. এম. বাহাদুর আলী বলেন, “সামান্য বৃষ্টি হলেই এই সড়কে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। গর্তের পানি জমে ছোট পুকুরের মতো অবস্থা হয়। শত শত রোগী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন।”

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুক্তি খাতুন, শেফালী খাতুন ও শহিদুল ইসলাম বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের রাস্তার এমন অবস্থা দেখে এখানে আসতেই মন চায় না। কিন্তু প্রয়োজনে আসতেই হয়। অনেক সময় রিকশা গর্তে আটকে যায়, রোগী কষ্ট পায়।”

রোগীর স্বজন মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “রোগী নিয়ে আসা মানেই ভয় আর ভোগান্তি। রাস্তায় খানাখন্দে চাকা পড়লে রোগী ভয় পায়, অনেক সময় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।”

ভ্যানচালক জহুরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই রাস্তায় ভ্যান চালানোই কষ্টকর। হঠাৎ চাকা গর্তে পড়লে রোগী পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তারপরও ঝুঁকি নিয়েই চালাতে হয়।”

স্থানীয় দোকানদার সুমন আহমেদ বলেন, “তিন-চার বছর ধরে রাস্তার এই অবস্থা। মাঝেমধ্যে খোঁড়াখুঁড়ি হয়, কিন্তু কাজ শেষ হয় না। এতে ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রবিউল আলম বলেন, “রাস্তাটির বেহাল অবস্থার বিষয়টি জানা গেছে। খুব শিগগিরই রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা বলেন, “বৃষ্টি হলে ডাক্তার, নার্স, রোগী—সবারই ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে একটি লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমাধান হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “বৃষ্টিতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পানিবদ্ধতার বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। গত মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। খুব দ্রুত এই ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

আপনার মতামত লিখুন

খোলা বার্তা

মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫


চার বছর ধরে সংস্কারহীন রাস্তায় দুর্ভোগে রায়গঞ্জের রোগীরা

প্রকাশের তারিখ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

প্রায় চার বছরেরও বেশি সময় ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে আছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা। প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে এ হাসপাতালে আসেন। কিন্তু খানাখন্দে ভরা রাস্তাটি এখন পরিণত হয়েছে রোগী ও স্বজনদের জন্য নতুন এক দুর্ভোগে।

গুরুতর অসুস্থ রোগী বহনকারী রিকশা-ভ্যান কিংবা অ্যাম্বুলেন্স প্রায়ই গর্তে আটকে পড়ে। এতে চিকিৎসা পেতে দেরি হওয়াসহ রোগীর অবস্থা আরও অবনতির আশঙ্কা দেখা দেয়।

শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রায়গঞ্জ বাজার চত্বরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশ ঘুরে দেখা যায়—হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে ছোট ছোট জলাশয়ে পরিণত হয়। ফলে কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল—তা বোঝা যায় না। এতে প্রায়ই মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ট্রাক, পিকআপভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন গর্তে পড়ে বিকল হচ্ছে। কেউ কেউ পড়ে গিয়ে আহতও হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা এস. এম. বাহাদুর আলী বলেন, “সামান্য বৃষ্টি হলেই এই সড়কে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। গর্তের পানি জমে ছোট পুকুরের মতো অবস্থা হয়। শত শত রোগী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন।”

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুক্তি খাতুন, শেফালী খাতুন ও শহিদুল ইসলাম বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের রাস্তার এমন অবস্থা দেখে এখানে আসতেই মন চায় না। কিন্তু প্রয়োজনে আসতেই হয়। অনেক সময় রিকশা গর্তে আটকে যায়, রোগী কষ্ট পায়।”

রোগীর স্বজন মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “রোগী নিয়ে আসা মানেই ভয় আর ভোগান্তি। রাস্তায় খানাখন্দে চাকা পড়লে রোগী ভয় পায়, অনেক সময় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।”

ভ্যানচালক জহুরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই রাস্তায় ভ্যান চালানোই কষ্টকর। হঠাৎ চাকা গর্তে পড়লে রোগী পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তারপরও ঝুঁকি নিয়েই চালাতে হয়।”

স্থানীয় দোকানদার সুমন আহমেদ বলেন, “তিন-চার বছর ধরে রাস্তার এই অবস্থা। মাঝেমধ্যে খোঁড়াখুঁড়ি হয়, কিন্তু কাজ শেষ হয় না। এতে ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রবিউল আলম বলেন, “রাস্তাটির বেহাল অবস্থার বিষয়টি জানা গেছে। খুব শিগগিরই রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা বলেন, “বৃষ্টি হলে ডাক্তার, নার্স, রোগী—সবারই ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে একটি লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমাধান হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “বৃষ্টিতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পানিবদ্ধতার বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। গত মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। খুব দ্রুত এই ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।”


খোলা বার্তা

সম্পাদক ও প্রকাশক : দীপক কুমার কর
নির্বাহী সম্পাদক : সাইদুল ইসলাম আবির।
মোবাইল: ০১৭৫০-৭০৭৬৩৬
ই মেইল: kholabartaonline@gmail.com
কপিরাইট © ২০২৫ খোলা বার্তা । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত